যে সব মহাসড়কে টোল আদায় হবে
প্রকাশিত : ০৫:৫৭ AM, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার ২৭০ বার পঠিত
মহাসড়কে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের আওতাধীন সড়ক-মহাসড়ক বিভাগ। ইতোমধ্যেই সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতায় থাকা সড়কের পরিমাণ ২১ হাজার ৫৯৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ হাজার ৯০৬ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-রংপুর এই চার মহাসড়কে সরকার টোল আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজে এই টোলের টাকা ব্যবহৃত হবে। এই টাকা আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। সড়ক বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শুরুতে দেশে চার লেনের মহাসড়কে টোল আদায় করা হবে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে ছয় লেন ও আট লেনের মহাসড়কে টোল বসবে। মহাসড়কগুলোর কোন কোন জায়গায়, কয় ধাপে, কী পরিমাণ টোল আদায় করা হবে, সে সব বিষয়ের কাজ চূড়ান্ত করার পর মাঠ-পর্যায়ের কাজে হাত দিতে চান সংশ্লিষ্টরা। এ ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চায় সড়ক বিভাগ।
সড়ক বিভাগ বলছে, সড়কে টোল আদায়ের ধারণা বাংলাদেশে নতুন নয়। বর্তমানে দেশের তিনটি মহাসড়কে ভিন্ন ভিন্ন হারে টোল দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলতে হয়। এই তিনটি মহাসড়ক হচ্ছে নলকা-হাঁটিকুমরুল-বনপাড়ার ৫০ কিলোমিটার, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগদীশপুর-শেরপুর অংশ (রুস্তমপুর টোল প্লাজা) পর্যন্ত ৭৪ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম পোর্ট অ্যাকসেস রোডের ১২ কিলোমিটার।
মহাসড়কে টোল আরোপের ক্ষেত্রে এই তিনটি সড়কের টোল হার বিবেচনায় রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সূত্র জানায়, এসব সড়কে যানবাহন ভেদে টোল-হারের ক্ষেত্রেও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন ২০০৩ সালের ১ মে থেকে নলকা-হাঁটিকুমরুল-বনপাড়ার সড়কে ট্রেইলারে ১৯০ টাকা, হেভি ট্রাকে ১৫০ টাকা, বড় বাসে ৬০ টাকা, মাইক্রোবাসে ৩০ টাকা, ৩ থেকে ৪ চাকার গাড়িতে ১০ টাকা ও মোটরসাইকেল প্রতি ৫ টাকা হারে টোল আদায় হচ্ছে। ২০০৫ সালের ১০ মার্চ থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জগদীশপুর-শেরপুর অংশের (রুস্তমপুর টোল প্লাজা) মহাসড়কে ট্রেইলারে ২৮০ টাকা, হেভি ট্রাকে ২২৫ টাকা, বড় বাসে ৭৫ টাকা, মাইক্রোবাসে ৪৫ টাকা, ৩- থেকে ৪ চাকার গাড়িতে ১০ টাকা ও মোটরসাইকেল প্রতি ৫ টাকা হারে টোল আদায় করা হয়। তবে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর চালু হওয়া চট্টগ্রাম পোর্ট অ্যাকসেস রোডের ১২ কিলোমিটার সড়কের টোল হার সবচেয়ে কম।
এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও মহসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আমরা কাজ শুরু করেছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়িত হবে। ইতোমধ্যেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি কাজ শুরু করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে আপাতত কোনো কমিটি করা হয়নি। প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে আমাদের একটি টিম কাজ শুরু করছে। তারা একটি খসড়া প্ল্যান চূড়ান্ত করে দাখিল করার পর দেখা যাবে কমিটি করা লাগবে কিনা।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন অতিরিক্ত প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন হলে জনপ্রতিনিধিদেরও সংযুক্ত করা হতে পারে। কারণ আমাদের মহসড়কগুলোর সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের অনেক সড়ক সংযুক্ত রয়েছে। এসব সড়কের যানবাহনগুলো এখন সরাসরি মহাসড়কে উঠে পড়ে। টোল আরোপ করার পর এসব সড়কের যানবাহনগুলোকে মহাসড়কে না তুলে ভিন্ন সড়কে তোলার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হবে। এ কারণেই জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, মহাসড়কে টোল দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এ জন্য যাত্রীদের ভাড়াও বাড়বে না। তবে সড়কের মান বাড়াতে হবে। স্বাচ্ছন্দ্যে গাড়ি চলার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyalokitosakal@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।