মেয়াদ শেষেও কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না!
প্রকাশিত : ০৬:৩৪ AM, ২ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার ২৪৬ বার পঠিত
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের জলকদর খালের ওপর নির্মিত মৌলভীবাজার সেতুটির নির্মাণ কাজে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি কাজের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত সেতুটির অর্ধেকেরও বেশি কাজ বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে। নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৭ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সেতুটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এলাকাবাসীদের মাঝে বর্তমানে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
২০১৮ সালের ১৫ মে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সেতুটির কাজ সমাপ্তির সম্ভাব্য তারিখ থাকলেও সেতুটির ৪০ ভাগ কাজ এখনো বাকী রয়েছে। পাকা সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় জরাজীর্ণ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীসহ সহস্রাধিক বিভিন্ন পেশার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পারাপারে বাধ্য হচ্ছে। সেতুটির উভয় পাশে বৈদ্যুতিক আলো না থাকায় বিশেষ করে রাতে ঐ সেতু দিয়ে পারাপারে দুর্ঘটনা ঘটছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে (এলজিইডি) “বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প” (চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা) (জিসিএইচডিপি) এর আওতায় ছনুয়া শেখেরখীল সড়কের চেইনেজ ৫১০০ মি. এ মৌলভীবাজার জলকদর খালের ওপর ৩৬.২০ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারে প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ৪ কোটি ২১ লাখ ২২ হাজার ৭শ ৭৯ টাকা। টেন্ডারে মেসার্স নিপা এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়। চুক্তির মূল্য ৩ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ৫০১ টাকা। কাজের চুক্তির তারিখ ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট এবং কাজ সমাপ্তির সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।
সম্প্রতি নির্মাণাধীন সেতু পরিদর্শনকালে স্থানীয়রা এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ তুলে জানান, পারাপারে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাঁশের ওপর তক্তা দিয়ে খালের ওপর নির্মিত ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ঝুকিপূর্ণ তক্তার সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করছেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এই সেতু ব্যবহার করে কুতুবদিয়া উপজেলার দুই ইউনিয়ন ও বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া, শেখেরখীল, গন্ডামারা ইউনিয়নের প্রায় ৩০ গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, এই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় গত দুই বছর ব্যবসায়ীরা ৮-১০ কিলোমিটারের ভিন্ন পথ পাড়ি দিয়ে ব্যবসায়িক মালামাল আনতে বাধ্য হচ্ছি। নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বিকল্প পারাপারে জন্য তৈরিকৃত কাঠের পাটাতনের সরু সেতু দিয়ে রাতে পারাপার হতে গিয়ে শিশুসহ অনেকেই খালের পানিতে পড়ে আহত হয়েছে। কাঠের সেতুটিও নড়বড়ে হওয়ায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
শেখেরখীল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন জানান, মৌলভীবাজার সেতুটির নির্মাণ কাজ বর্তমানে অর্ধেক অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দ্রুত কাজ সম্পাদনের জন্য মাসিক সমন্বয় সভায় অনেকবার আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমান জলকদর খালটির ওপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ সরু তক্তার সেতু দিয়ে পারাপারে মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই সেতুটির নির্মাণ কাজ অচিরেই সমাপ্ত করতে মাননীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, মৌলভীবাজার জলকদর খালের ওপর নির্মিত সেতুটির প্রায় ৪৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট কাজের সময় বর্ধিত করার জন্য পত্র প্রেরণ করেছি। কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyalokitosakal@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।