বাগমারায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন কাটাই-মাড়াই কাজে শ্রমিক সংকট
প্রকাশিত : ০৪:৫৯ AM, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার ১৮৪ বার পঠিত
উপজেলায় এবার আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ভরা মৌসুমে ধান কাটাই,মাড়াইয়ের জন্য পাওয়া যাচ্ছে না কৃষি শ্রমিক। ফলে বিপাকে পড়ছেন কৃষকরা। অধিকাংশই চাষের জমি এখন বর্গা (আদি) দিচ্ছেন কৃষকরা। ফলে তাদের আয় কমছে। এই উপজেলার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক কৃষি শ্রমিক এখন নানান পেশায় জড়িত হয়ে পড়েছেন। তাদের কেউ কেউ কৃষিকাজে শ্রম বিক্রির বদলে ভ্যানচালক, আলুর স্টোরের শ্রমিক, রাজমিস্ত্রি, কেউবা ভাটা শ্রমিক, আবার অনেকে মাছ উত্পাদন ও মাছ পরিবহনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এসব কাজে অল্প শ্রম দিয়ে বেশি মজুরি পাওয়ার জন্য কৃষি শ্রমিকরা তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে এখন এসব পেশায় জড়িত হয়ে পড়েছে।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এখানে প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার-বীজের সহজ প্রাপ্যতা ও স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে ধানের ফলনও হয়েছে বাম্পার। সম্প্রতি জমির ধান পেকে ওঠা শুরু করায় কৃষক ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে শ্রমিক সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। এই উপজেলায় ধান কাটাই ও মাড়াই কাজ করার জন্য শত শত কৃষি শ্রমিক এসে হাজির হয়েছে পার্শ্ববর্তী বাঘা চারঘাট ও পাবনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে। এসব শ্রমিক ধান কাটাই, মাড়াই শেষে প্রতি মণ ধান থেকে সাত কেজি হারে নিয়ে থাকেন। এছাড়া তাদের তিন বেলা খাবার ও পান-বিড়ি দিতে হয় কৃষককে। এতে কৃষকের খরচ অনেক বেশি হয়। উপজেলার দেওলা গ্রামের কৃষি শ্রমিক আজাদ, আনিছার, মজনুসহ ১০/১২ জন শ্রমিক জানান, তারা আগে চাষাবাদের কাজে শ্রম বিক্রি করতেন। তাদের মতে, চাষাবাদে মজুরি কম এবং সময় লাগে বেশি। এছাড়া চাষাবাদে হাজিরা হিসেবেও মজুরি কম পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য চুক্তিভিত্তিক কাজে কম পরিশ্রম করে বেশি মজুরি পাওয়া যায়।
হামিরকুত্সার কৃষক মঞ্জুর রহমান জানান, পৈতৃক সূত্রে তাদের প্রায় ২০ একর জমি। বাপ-দাদার আমল থেকেই তারা কৃষক। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিকের অভাবে তারা তাদের জমিগুলো বর্গা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মঞ্জুর ভাই রফিক জানান, বর্তমানে শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। পাওয়া গেলেও তারা ব্যাপক মজুরি দাবি করে বসে। মাড়িয়ার কৃষি শ্রমিক ময়েজউদ্দিন জানান, আগে কৃষিকাজে সারাদিন শ্রম বিক্রি করে ৩০০/ ৩৫০ টাকা পেতাম। এখন ভ্যান চালিয়ে দিনে ৫০০ টাকার বেশি আয় হয়। তার মতে, ভ্যান চালনার পাশাপাশি নিজের সংসারও দেখাশোনা করা যায়। তার পরিচিত অনেক ভ্যানচালক আগের কৃষিকাজে শ্রম বিক্রির বদলে এখন ভ্যানগাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাজিবুর রহমান জানান, বর্তমানে আউশ ধান কাটাই, মাড়াই মৌসুমে এই উপজেলায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তার মতে- কৃষি শ্রমিক না পাওয়ায় চাষাবাদও কিছুটা কমেছে। কারণ শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে ধানের ফলন বাম্পার হওয়ায় কৃষক খরচ কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারছে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyalokitosakal@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।