নড়িয়ায় বাঁধ ধসে ১২ বসতবাড়ি বিলীন
প্রকাশিত : ০৪:৫৭ AM, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার ২২৫ বার পঠিত
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীর ভাঙন রোধের ‘নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ বাঁধের ২৮০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। বাঁধ ধসে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর কেদারপুর গ্রামের ১২টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবল থেকে আরো ২৫টি বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ভাঙনের খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ঐ এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ভাঙন রোধের জন্য ঐ অংশে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছেন পাউবোর শ্রমিকরা। যাদের বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে তাদের ১০ হাজার টাকা ও যাদের ঘর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে তাদের ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোত বেড়েছে। স্রোতের কারণে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নড়িয়া রক্ষা বাঁধের ৪০ মিটার অংশে ধস দেখা দেয়। ঐ ধস ঠেকাতে পাউবোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাড়ে ১২ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাধুর বাজারের ঐ স্থানের পাশে হঠাত্ ধস শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে তীর উপচে নদীর পানি উঠে যায়। আর বালুভর্তি জিও ব্যাগগুলো নদীতে তলিয়ে যেতে থাকে। আস্তে আস্তে তীরের পাশের মাটি ধসে যেতে থাকে।
কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন দেওয়ান জানান, তীর রক্ষা বাঁধ ধসের খবরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ১২টি বসতঘর ও একটি মসজিদ বিলীন হয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গত বছর নড়িয়ার আট কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙন ছিল। ভাঙনে ঐ এলাকার সাড়ে ছয় হাজার পরিবার গৃহহীন হয়। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডকে ঐ কাজের আদেশ প্রদান করেন। যার মধ্যে রয়েছে ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নড়িয়ার সুরেশ্বর থেকে জাজিরার কায়ুম খাঁর বাজার পর্যন্ত আট দশমিক নয় কিলোমিটার অংশে নদীর তীর রক্ষার কাজ। বাকি টাকা দিয়ে নদীর চর খনন করা হবে। গত বছর ১২ ডিসেম্বর ঐ প্রকল্পের নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে তিন বছরে। প্রথম বছরে ৪০ লাখ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। দ্বিতীয় বছর ও তৃতীয় বছরে ৩২ লাখ ৫০ হাজার সিসি ব্লক ফেলা ও প্রকল্পের অন্যান্য কাজ করার কথা। ইতিমধ্যে পাউবোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল গ্রুপ নড়িয়া ও জাজিরার সাত কিলোমিটার এলাকায় ৩২ লাখ ৭০ হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে। আর ২৫ হাজার সিসি ব্লক ফেলেছে।
শরীয়তপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঐ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, নদীতে পানি ও স্রোত বাড়ার কারণে ৪০ মিটার জায়গায় বালুর জিও ব্যাগ নিচের দিকে দেবে যাচ্ছিল। তখন ঐ স্থানে সার্ভে করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করি। চার দিনের মধ্যেই স্থানটি ঝুঁকিমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সাধুর বাজারের পাশে হঠাত্ কেন ধস শুরু হয়েছে তা বুঝতে পারছি না। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, নড়িয়া প্রকল্পটি অনেক বড়ো। ঐ প্রকল্পের কাজ করার কারণে এ বছর নড়িয়ার ভাঙন ঠেকেছে। নদীতে স্রোত ও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। পাউবো কাজ করছে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyalokitosakal@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।