ধামরাইয়ে দূর্গা মন্দিরের পাশেই ব্যতিক্রমী প্রতিবাদী মূর্তি
প্রকাশিত : ০৮:১২ PM, ৮ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার ১৪৭ বার পঠিত
একপাশে দূর্গা মূর্তির সামনে পূজায় ব্যস্ত পুরোহিতরা। অন্যদিকে সেখানকার ভিড় ছাপিয়ে দর্শনার্থীদের মনোযোগ কেড়েছে বাল্যবিবাহের প্রতিবাদী প্রতীকী মূর্তি। মঞ্চজুড়ে একপাশে কানে ধরা ঘটক, তার কাছেই বিয়ের সাজে কিশোরী মেয়ে ও বর। বরের হাতের বিয়ের ফুল তবে তার আরেক হাতে ধরে রেখেছেন পুলিশ। তারপরেই ক্রমানুসারে প্রতীকী নারী চরিত্র ও মাদক বিরোধী প্রতীকী চরিত্র। এসব চরিত্রের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে বাল্যবিবাহ ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
শারদীয় দুর্গোৎসবে দূর্গা প্রতিমার পাশেই এমন প্রতীকী প্রতিবাদী মূর্তি গড়া হয়েছে ঢাকার ধামরাইয়ের বারবাড়ীয়াতে জগদীশ চন্দ্র দাশের বাড়ির সার্বজনীন মন্দিরে।
মূর্তির কাছেই বসেছিলেন ভজহরি সরকার (ভজন)। কাছে যেয়ে ডাকতেই এগিয়ে এসে জানালেন মূর্তির শীল্পি তিনি নিজেই। তারপর বললেন মূর্তির গল্প।
ভজহরি সরকার বলেন, দেবী দূর্গা প্রতিবাদের শুভ রুপ। বাল্যবিবাহ ও মাদক আমাদের সমাজে একটা অশুভ বিষয়। এর কারণে আমাদের সমাজ পিছিয়ে পড়ছে। দুর্গোৎসবে প্রচুর জনসমাগম হয়, অনেক মানুষ আসেন তারা মূর্তি দেখেন। তাই পরিকল্পনা করলাম দূর্গা মূর্তির পাশেই যদি এমন কিছু করা যায়। একথা পূজার আয়োজক জগদীশ বাবুকে জানাতেই তিনি সায় দেন। পরে এই মূর্তি গড়ে তুলি দূর্গা মন্দিরের পাশেই।
তিনি বলেন, কাঠ দিয়ে বানানো প্রতিমাগুলো ইলেকট্রিকের মাধ্যমে সচল করা হয়েছে। বিদ্যুতায়িত মুর্তিগুলোর সচলতার মধ্য দিয়ে তার কাজগুলো বুঝতে পারছেন দর্শকরা।
ভজহরি সরকার জানারেন, পূজার শুরুর পর থেকেই দূর্গা মূর্তির পাশাপাশি প্রচুর দর্শকের দৃষ্টি কেড়েছে এই প্রতীকী প্রতিবাদী মূর্তি।
কথা হলো কয়েকজন দর্শনার্থীর সঙ্গে। তারা জানালেন, দূর্গা পূজা দেখতে এসে এমন সৃজনশীল প্রতীকী প্রতিবাদ দেখতে পেরে অবাক হয়েছেন তারাও।
প্রতীকী মূর্তির দর্শনার্থী মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী বৃষ্টি মজুমদার বলেন, সমাজে বাল্যবিবাহ বেড়েছে। সরকার নানাভাবে সেসব ঠেকানোর চেষ্টা করছে। তবে আমাদের সমাজ যদি সচেতন না হয় তাহলে বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে না। আর এরকম সামাজিক উৎসবে এমন প্রতীকী প্রতিবাদী মূর্তি সচেতনতা তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আরেক দর্শনার্থী শ্যামল দাস বলেন, দূর্গা পূজায় দেবীর মূর্তি দেখতে আসেন প্রচুর ভক্তরা। দেবীর শুভ বার্তা নিয়ে যান তারা। মন্দিরের পাশে এমন মূর্তি তেমন সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
মন্দিরের আয়োজক কমিটির সদস্য অনন্ত দাশ বলেন, বাল্যবিবাহ সমাজের জন্য একটা বড় অভিশাপ। এর থেকে সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরাও সেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছি। মূর্তির দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। মন্দিরের পাশেই এই মূর্তি গড়া হয়েছে। মানুষ দূর্গা মূর্তি দেখার পাশাপাশি এই প্রতীকী মূর্তিও দেখছেন।
আলোকিত সকাল/ফাহাদ
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyalokitosakal@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।