টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে শীতকালীন সবজি
প্রকাশিত : ০৭:২২ PM, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার ৩৮৯ বার পঠিত
গত কয়েক দিন ধরে রাজশাহী অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো কখনো বাড়ছে বৃষ্টির গতি। কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। এতে কপাল পুড়েছে আগাম শীতকালীন সবজি চাষিদের। বৃষ্টি বন্ধ না হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন চাষিরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এই মুহূর্তে সমুদ্রে বিরাজ করছে নিম্নচাপ। এরই প্রভাবে রাজশাহীসহ দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রোববারের পর কেটে যেতে পারে নিম্নচাপ। এরপর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।
রাজশাহী বিভাগে রয়েছে পাঁচটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। এর মধ্যে ঈশ্বরদীতে শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩ মিলিমিটার। এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর ৪৭ মিলিমিটার এবং ২৬ সেপ্টেম্বর এক মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত হয় এই এলাকায়।
তবে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় শনিবার রেকর্ডযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে এই উপজেলায়।
শনিবার ভোর থেকে রাজশাহীতে থেমে থেমে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮ মিলিমিটার। এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজশাহীতে।
এদিকে, গত দুদিন ধরে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে বগুড়ায়। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত এখানে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০ মিলিমিটার।
শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১ মিলিমিটার। এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর এখানে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
ঢাকার আবহাওয়া অফিস জানায়, সেপ্টেম্বরে রাজশাহী বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে ২৮৫ থেকে ৩৪৫ মিলিমিটার পর্যন্ত। এবারও বৃষ্টিপাত এমন বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তবে আগামী অক্টোবরে কমে আসবে বৃষ্টিপাত। অক্টোবরের প্রথমার্ধে আসতে পারে একটি নিম্নচাপ। এরপরই প্রকৃতি থেকে বিদায় নেবে বর্ষা।
কৃষকরা বলছেন, কয়েক দিন ধরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। তবে একনাগাড়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নামছে। রোদ নেই। এতে আগাম শীতকালীন সবজির চারা নষ্ট হচ্ছে ক্ষেতে।
কয়েকদিন আগে বেড়ে উঠেছিল বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, মুলাসহ আগাম শীতকালীন সবজির চারা গাছ। কিন্তু চলমান বৃষ্টিতে একেবারেই নেতিয়ে পড়েছে সবজিগুলো। ক্ষেতে পানি জমায় গোড়া পচে মরে যাচ্ছে চারাগাছ। বাড়তি লাভের আশায় আগাম সবজি চাষে নামা কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। রাজশাহীর আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয় এমন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।
রাজশাহীর পবা উপজেলার মুরারিপুর গ্রামের কৃষক ইয়ার চাঁন আলী বলেন, বাড়তি লাভের আশায় প্রতি বছরই আগাম ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করি। ফসল তুলে হাসিমুখে ফিরি। এবারও ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছি। কিন্তু গত কয়েকদিন বৈরী আবহাওযায় চারা গাছ মারা যাচ্ছে। এবার লাভের আশা ছেড়ে দিয়েছি।
একই এলাকার সবজি চাষি আরিফুল ইসলাম বাঁধাকপি চাষ করেছেন সাড়ে তিন বিঘা জমিতে। তার ভাষ্য, পানি জমে অধিকাংশ চারা গাছের গোড়া পচে গেছে। তবে যেগুলো একটু উঁচুতে ছিল সেগুলো কোনো রকমে বেঁচে আছে। এবার মোটা অংকের লোকসানে পড়তে হবে।
জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল হক বলেন, রাজশাহীতে তেমন ভারী বৃষ্টিপাত হয়নি। তারপরও যেসব ক্ষেত এখনো স্যাঁতসেঁতে রয়েছে সেসব ক্ষেতে চারার গোড়া পচা রোগের আক্রমণ দেখা দিতে পারে। রোদ হলেই এই সংকট কেটে যাবে। সংকট থেকে গেলে সেই ক্ষেত্রে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে।
রোববারের মধ্যে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে জানিয়ে শামছুল হক বলেন, এই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে। তবে আগাম শীতকালীন সবচি চাষের জন্য বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে উঁচু জমি নির্বাচন করা দরকার।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- dailyalokitosakal@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।