জেনে নিন, সাহসী হওয়ার উপায়
প্রকাশিত : 05:57 AM, 21 September 2019 Saturday 688 বার পঠিত
কখনো কি চিন্তা করে দেখছেন, কিছু মানুষ কীভাবে হিমালয় জয় করে, সমুদ্র বিজয় করে বিশাল এই পৃথিবীকে আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে? শুধু বিশ্বজয় কেন, নিজ জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে হলেও আমাদের যেসব গুণাবলি থাকতে হয়, তাদের মধ্যে সাহস অন্যতম। তবে, সাহস সবার ক্ষেত্রে সমান না হলেও কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে তা বাড়ানো যায়, সাহসী হওয়া যায়। সেসব পদ্ধতিগুলো জানার আগে আসুন প্রথমে জেনে নিই, সাহস জিনিসটা কী।
এক কথায় বলতে গেলে, ভয়ের অভাবকেই সাহস বলে। অর্থাৎ যেখানে সাহস থাকে, সেখানে ভয় কম থাকে। তার অর্থ এই নয় যে, সাহসী মানুষের কোনো ভয় নেই। সাহসী মানুষেরও ভয় আছে। তবে তা খুবই কম; যা নেই বললেই চলে। সাহস সাধারণত দুই ধরনের; শারীরিক সাহস ও মানসিক সাহস। শারীরিক সাহস হচ্ছে আরাম ছেড়ে দিয়ে জীবন ঝুঁকি নিয়ে কোনো কিছু জয় করার ইচ্ছা। আর, মানসিক সাহস হচ্ছে সেসব জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছানোর উদ্যম ও উৎসাহ।
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, ‘যখনই আমাদের সাহস নিয়ে আলোচনা করতে হবে, তখনই অবশ্যই আমাদের ভয় নিয়ে ভাবতে হবে।’ কারণ ভয় কমানো ছাড়া সাহস সঞ্চয় করা মোটেই সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় লেখক ডেল কার্নেগি বলেন, ‘সাহসী হওয়ার অর্থ ভয় ধ্বংস করা নয়। সাহসী হওয়ার অর্থ ভয়কে স্বীকার করে ভয়কে জয় করার কৌশল জানা।’
তাই, সাহসী হতে হলে যদি ভয়কে জয় করতে হয়, তবে প্রথমেই জানতে হয় মানুষ সাধারণত কীসের ভয় পায়? এ প্রশ্নের উত্তর বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন হলেও তা মোটামুটি দুটি ভাগে ভাগ করা যায়—
১. জানা জিনিসের ভয় (সাপ, তেলাপোকা, বাঘ, নদীর স্রোত ইত্যাদি)
২. অজানা জিনিসের ভয় (অন্ধকার, অশরীরী আত্মা ইত্যাদি)
তবে ডেল কার্নেগি ফাউন্ডেশনের গবেষণা মতে, জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে হলে আমাদের যেসব ভয়কে জয় করে সাহসী হতে হয় তা হলো—
১. তিরস্কার বা সমালোচনার ভয়
২. ব্যর্থতা বা অকৃতকার্যের ভয়
কীভাবে সেসব ভয় জয় করে সাহসী হতে হয়? সে জন্য যে সব কাজ করতে হবে তা হলো—
১. থেমে না গিয়ে কাজ করে যান। কারণ কাজ করা অবস্থায় ভয় কম আসে।
২. সাধারণত মানুষ ভয় জয়ের ঠিক আগ মুহূর্তেই চেষ্টা ছেড়ে দেয়। তাই চেষ্টা ছাড়বেন না।
৩. চেষ্টা করে কাজ না হলে সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অন্য পন্থা অবলম্বন করুন।
৪. কিছু না করে চুপ থাকলেই তিরস্কার ও সমালোচনার ভয় জয় করে সাহসী হওয়া যায়।
৫. নিয়মিত ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম মানুষকে সাহসী করে।
৬. ক্ষুধার্ত বা দুর্বল থাকলে ভয় আসে। তাই, ভয় আসলে ক্ষুধার্ত থাকলে কিছু খান।
৭. ভয়ের কারণ সরালেই সাহস বাড়ে। অন্ধকারে ভিতু থাকলে অন্ধকার দূর করলেই সাহসী হওয়া যায়।
৮. নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।
৯. নিজের ভুল স্বীকার করুন।
১০. না বলতে শিখুন। (যৌক্তিক হলেও অনেকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে না বলতে পারেন না)
তবে যাঁরা মনে করেন, এসব সাহস বাড়িয়ে ভয়কে জয় করে কী হবে? কপালে (ভাগ্যে) থাকলে তা এমনিতেই আসবে। তাঁদের উদ্দেশ্যে একটি ল্যাটিন প্রবাদ মনে করিয়ে দিতে চাই। এই প্রবাদটি যে শুধু আমেরিকান আর্মি মেনে চলে তা কিন্তু নয়, সারা পৃথিবীতেই প্রবাদটি মোটামুটি প্রচলিত। তা হলো- Fortuner favors the brave. অর্থাৎ ভাগ্য সাহসীদের পক্ষে থাকে।
মনে রাখবেন, এই সাহস আর ভয় হলো একটি মুদ্রার দুটি পিঠ। তবে কোনটি আপনি নেবেন, সেটা মুদ্রাটি ছুড়ে আপনার ভাগ্যের ওপর ফেলে দেওয়া হয় না। এটা আপনাকেই নির্বাচন করতে হয়। সাহসীরা মুদ্রার সাহসের পৃষ্ঠাটি পছন্দ করেন। সে জন্য ভয় তাঁদের মুদ্রার মতোই নিচে পড়ে থাকে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি Alokito Sakal'কে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
Alokito Sakal'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।